বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫২ পূর্বাহ্ন
ফরাজী মো.ইমরান,(পটুয়াখালী বিশেষ প্রতিনিধি) :
আজ (৯অক্টোবর) মধ্য রাত থেকে শুরু হচ্ছে ২২দিনের ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা। মা ইলিশের বাধাঁহীন প্রজননের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য অধিদপ্তর। গত কয়েক বছর ধরে মৎস্য বিভাগের সময়পোযোগী এমন সিদ্বান্তে বাড়ছে ইলিশের উৎপাদন।
তবে প্রজননের এ সময়ে পার্শবর্তী দেশের জেলেদের মাছ ধরা বন্ধসহ প্রকৃত ইলিশ জেলেদের জন্য প্রদেয় প্রনোদনা বাড়ানোর দাবী কলাপাড়ার উপকূলীয় এলাকার জেলে ও ব্যবসায়ীদের।
মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, অশ্বিনের পূর্নিমার চারদিন আগে এবং পূর্নিমার পরের ১৮ দিনসহ ২২দিন প্রায় ৮০ শতাংশ মা ইলিশ বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলের নদীর মোহনা এসে ডিম ছাড়ে। ফলে মিঠা পানিতে মা ইলিশের বাধাঁহীন প্রজননের জন্য ৮ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের আহরন, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত, ক্রয়-বিক্রয়সহ বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ আইন অমান্যকারীকে এক থেকে সবোর্চ্চ ২ বছরের
জেল অথবা সবোর্চ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ড হতে পারে।
সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষনের জন্য মৌসুমের শুরুতে ইলিশের ভরা মৌসুমে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধ রাখার নিষেধাজ্ঞা অরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মৎস্য বিভাগ। চলতি বছর নতুন করে আরোপিত ৬৫ দিনের এ অবরোধ শেষে মাছ শিকারে সাগর যাত্রায় প্রথম দিকে জেলেদের জালে ছিল ইলিশের আকাল। এসময় পরিবারের ভরনপোষনসহ জীবিকা হারানোর শংকায় পড়েছিল কলাপাড়ার উপকূলীয় এলাকার অর্ধলক্ষাধিক
জেলে। কিন্তু শেষ সময়ে এসে জেলেদের জালে মিলেছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশ। এতে ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখে জেলে, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিস্টরা।
ফলে মাছের রাজা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্বিতে মৎস্য বিভাগের এমন সিদ্বান্তে খুশী তারা।
তবে ২২ দিনের কর্মহীন সময়ে জনপ্রতি ২০কেজি করে দেয়া চালের প্রনোদনা বাড়ানোসহ নির্ধারিত
সময়েই তা প্রকৃত ইলিশ শিকারীদের মাঝে বিতরনের দাবী জেলেদের।
আলীপুরের এফবি নুরজামাল ফিশিং ট্রলারের মাঝি সবুজ গাজী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক ইলিশ শিকারী জেলে সহায়তা পাচ্ছেন না। যারা
ছোট ছোট জাল নিয়ে নদী বা খালে মাছ শিকার করে তারা পাচ্ছেন সহায়তা। আলীপুরের এফবি শুকতারা ট্রলারের মাঝি কবির জানান, আমদের
দেশে যখন অবরোধ দেয়া হয়। ভারতীয় এবং মায়ানমারের জেলেরা তখন মাছ শিকার করে। আলোচনা করে যদি একই সময়ে অবরোধ দেয়া হয় তবে আমাদের জন্য ভাল হয়।
কুয়াকাটা-অলীপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি ও ট্রলার মালিক সমিতি সভাপতি আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, মাছের রাজা ইলিশ সংরক্ষন করা গেলে
বাড়বে অন্যান্য মাছের উৎপাদন। যার সুফল ভোগ করবে জেলেসহ ব্যবসায়ীরা। এটা বুঝতে পেরে কোন জেলেই এখন আর অবরোধকালীন সময়ে মাছ শিকার করতে যাচ্ছে না। তবে এসময়ে জেলেদের যে সহায়তা দেয়া হয় তা খুবই নগন্য।
কলাপড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা জানান, মাছ ধরায় বিধি নিষেধের ফলে বিগত বছরে প্রায় ৪৮ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়তে
সক্ষম হয়েছে। ইলিশের উৎপাদন দ্বিগুন হয়েছে। অবরোধ সফল করতে জেলেদের নিয়ে উঠান বৈঠকসহ চলছে ধারাবাহিক গনসংযোগ।